Home রুহ রুহ

রুহ

451
1

ভূমিকা

রুহ আরবি শব্দ যার অর্থ করা হয়েছে প্রাণ, বায়ু ,বাতাস, হাওয়া ইত্যাদি। পবিত্র কুরআনে রুহ শব্দটি এসেছে ২৩ বার ৩ টি ভিন্ন অর্থে। সমাজে সর্বাধিক প্রচলিত ধারণা রুহের বদৌলতে জীবন সচল থাকে। প্রতিটি প্রাণীর জীবনাবসানে মৃত্যুর ফেরেশতা রুহ হনণের মাধ্যমে জাগতিক এবং পারলৌকিক জগতের মাঝে পার্থক্য টেনে দেয়, আর রুহ না ফেরার দেশে যাত্রা করে। অন্যান্য জীবের মত রুহ কোন উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত নয় কিংবা বংশ বিস্তাারের মাধ্যমে ক্রমবিকাশ ঘটে না। জাগতিক জ্ঞান দ্বারা রুহকে কোনোভাবেই ধারণায় আনা সম্ভব নয় যদিও সমাজে সুফি-সাধক রুহের অস্তিত্ব উপলব্ধি করতে সক্ষম বলে দাবি করে আসছেন। প্রকৃতপক্ষে রুহ সরাসরি আল্লাহর হুকুমে একটি নিখুঁত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাণীর দেহে অস্তিত্ব লাভ করে থাকে। রুহ প্রতিটি প্রাণীর দেহকে সতেজ, ক্রিয়াশীল ও জীবন্ত করে রাখে।
পবিত্র কুরআনে রুহ মূলত তিনটি প্রসঙ্গে এবং তিনটি ভিন্নার্থে ব্যবহৃত হয়েছে-
১. রুহ =প্রাণ, জীবন, হাওয়া , বায়ু ,বাতাস , আত্মা –
২. জিব্রাইল (আ:) কে রুহ বলে উল্লেখ করা হয়েছে-
৩. পবিত্র কুরআনুল কারীমকে রুহ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে –
ক) রুহ যখন প্রাণ, জীবনশক্তির আধার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তার সমর্থনে কুরআনুল কারিমের সুরা হিজর, তাহরীম, মুজাদালা এবং সাদ এর সংস্লিষ্ট আয়াত এখানে উপস্থাপন করছি –
وَ اِذۡ قَالَ رَبُّکَ لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اِنِّیۡ خَالِقٌۢ بَشَرًا مِّنۡ صَلۡصَالٍ مِّنۡ حَمَاٍ مَّسۡنُوۡنٍ
 আর স্মরণ কর, যখন আপনার রব ফেরেশতাদেরকে বললেন, নিশ্চয় আমি গন্ধযুক্ত কাদার শুষ্ক ঠনঠনে কালচে মাটি হতে মানুষ সৃষ্টি করতে যাচ্ছি ( ১৫:২৮)
فَاِذَا سَوَّیۡتُهٗ وَ نَفَخۡتُ فِیۡهِ مِنۡ رُّوۡحِیۡ فَقَعُوۡا لَهٗ سٰجِدِیۡنَ
 অত:পর যখন আমি তাকে সুঠাম করব এবং তাতে আমার পক্ষ থেকে রুহ সঞ্চার করব তখন তোমরা তার প্রতি সিজদাবনত হয়ে (১৫:২৯).
وَ مَرۡیَمَ ابۡنَتَ عِمۡرٰنَ الَّتِیۡۤ اَحۡصَنَتۡ فَرۡجَهَا فَنَفَخۡنَا فِیۡهِ مِنۡ رُّوۡحِنَا وَ صَدَّقَتۡ بِکَلِمٰتِ رَبِّهَا وَ کُتُبِهٖ وَ کَانَتۡ مِنَ
الۡقٰنِتِیۡنَ
 আরও দৃষ্টান্ত পেশ করেন ইমরান-কন্যা মারইয়ামের যে তার লজ্জাস্থানের পবিত্রতা রক্ষা করেছিল, ফলে আমরা তার মধ্যে ফুঁকে দিয়েছিলাম আমাদের রুহ হতে। আর সে তার রবের বাণী ও তার কিতাবসমূহ সত্য বলে গ্রহণ করেছিল এবং সে ছিল অনুগতদের অন্যতম।(৬৬ :১২)
فَاِذَا سَوَّیۡتُهٗ وَ نَفَخۡتُ فِیۡهِ مِنۡ رُّوۡحِیۡ فَقَعُوۡا لَهٗ سٰجِدِیۡنَ
 অত:পর যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রুহ সঞ্চার করব, তখন তোমরা তার প্রতি সিজদাবনত হয়ো (৩৮: ৭২)
বর্ণিত তিনটি আয়াতে রুহ যে প্রাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে তা স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে-
খ) রুহ যখন জিব্রাইল হিসেবে উেেল্লখ করা হয়েছে সে ক্ষেত্রে নিম্নে বর্ণিত আয়াতসমূহ উদাহরণ হিসেবে পেশ করা যায়-
قُلۡ نَزَّلَهٗ رُوۡحُ الۡقُدُسِ مِنۡ رَّبِّکَ بِالۡحَقِّ لِیُـثَبِّتَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ هُدًی وَّ بُشۡرٰی لِلۡمُسۡلِمِیۡنَ
 বলুন, আপনার রবের কাছ থেকে রূহুল-কুদুস (জিবরীল) যথাযথ ভাবে একে (কুরআন) নাজিল করেছেন, যারা ইমান এনেছে তাদেরকে সুদৃঢ় করার জন্য এবং হেদায়াত ও মুসলিমদের জন্য সুসংবাদ স্বরূপ (১৬:১০২)
نَزَلَ بِهِ الرُّوۡحُ الۡاَمِیۡنُ
 বিশ্বস্ত রুহ (জিবরীল) তা নিয়ে নাজিল হয়েছেন (২৬:১৯৩)
– مَ یَقُوۡمُ الرُّوۡحُ وَ الۡمَلٰٓئِکَۃُ صَفًّا ؕ٭ۙ لَّا یَتَکَلَّمُوۡنَ اِلَّا مَنۡ اَذِنَ لَهُ الرَّحۡمٰنُ وَ قَالَ صَوَابًا
 সেদিন রুহ ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াবে সেদিন কেউ কথা বলবে না, তবে ‘রহমান’ যাকে অনুমতি দেবেন সে ছাড়া, এবং সে সঠিক কথা বলবে (৭৮ :৩৮)
বর্ণিত আয়াতসমূহে জিব্রাইল (আ:) কে আল্লাহ রুহ নামে অবিহিত করেছেন ।

গ) রুহ কুরআনুল করিম হিসেবে যখন, তার সমর্থনে নিম্ন বর্ণিত আয়াত পেশ করছি-
یُنَزِّلُ الۡمَلٰٓئِکَۃَ بِالرُّوۡحِ مِنۡ اَمۡرِهٖ عَلٰی مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِهٖۤ اَنۡ اَنۡذِرُوۡۤا اَنَّهٗ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّاۤ اَنَا فَاتَّقُوۡن
 তিনি তার বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছে স্বীয় নির্দেশে রুহ -ওহিসহ ফিরিশতা পাঠান এ বলে যে, তোমরা সতর্ক কর, নিশ্চয় আমি ছাড়া কোন সত্য ইলাহ নেই কাজেই তোমরা আমার ব্যাপারে তাকওয়া অবলম্বন কর।(১৬ : ০২)
ولٰٓئِکَ کَتَبَ فِیۡ قُلُوۡبِهِمُ الۡاِیۡمَانَ وَ اَیَّدَهُمۡ بِرُوۡحٍ مِّنۡهُ ؕ وَ یُدۡخِلُهُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِهَا الۡاَنۡهٰرُ

 

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here